ঐতিহাসিক ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ছাত্রজনতার রোষে তিনি ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেন। এ বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড়।
প্রশ্নপত্রে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘২০২৪ সালে কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন?’ এটি ছিল ‘বিশ্বয়ানের পৃথিবীতে ভারতের পররাষ্ট্র নীতি’ সংক্রান্ত বিষয়ের প্রশ্ন।
প্রশ্নটি নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রশ্নটি সম্পূর্ণ ভুল হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হলো তাদের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। শেখ হাসিনা ছিল সরকার প্রধান। এছাড়া এতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের কথা বলা হয়েছে। ভারত হাসিনাকে এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি। এমন ভুল প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে পারে। এটি অগ্রহণযোগ।’
শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল প্রশ্ন করা হয়েছে কি না সেটিও দেখার বিষয় বলে জানিয়েছেন সাবেক এই ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি বলেছেন, ‘এটি কী সাধারণ একটি ভুল ছিল নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল প্রশ্ন করা হয়েছে, যেন শিক্ষার্থীদের জ্ঞান যাচাই করা যায়— এটিও জানা গুরুত্বপূর্ণ।’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর সমীর কুমার দাস বলেছেন, এটি একটি সাধারণ জ্ঞানের ‘সাধারণ’ প্রশ্ন। তবে প্রশ্নে রাজনৈতিক আশ্রয় থাকার বিষয়টিতে তিনি খুশি হতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘যদি প্রশ্নে রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়ে থাকে, তাহলে দেখতে হবে এটি আমাদের কূটনৈতিক কথাবার্তার সঙ্গে যায় কি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজি বোর্ডের এক সদস্য বলেছেন, শিক্ষকরা প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করছেন। কিন্তু কেউ এ ব্যাপারে লিখিত দেননি। তিনি জানিয়েছেন, পরীক্ষার জন্য তিন সেট প্রশ্ন তৈরি ও একটি চূড়ান্ত করা হয়। যদি কেউ এটি আগে বলত তাহলে বৈঠকে এ নিয়ে সূক্ষ্ম আলোচনা করা যেত।
খুলনা গেজেট/ টিএ